ঢাকা,বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

ভোটার ৩১২৮, ভোট পড়েছে ৬১৩৫

vote-riging-vote-karchopi-e_1বেলছড়িতে ইউপি নির্বাচন :

 তৃতীয়ধাপের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে অস্বাভাবিক ভোট দেখানো হয়েছে। বিগত সব রেকর্ড ভঙ্গ করে এবার খাগড়াছড়ির মাটিরাংগা উপজেলার বেলছড়ি ইউপিতে সর্বোচ্চ প্রদত্ত ভোটের হার দেখানো হয়েছে ১৯৬ শতাংশ। একইভাবে নওগাঁও জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার চন্দননগর ইউপিতে ভোট পড়েছে ১০৭ শতাংশ। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রস্তুত করা ফলাফল বার্তায় এ তথ্য দেখানো হয়েছে। যত ভোটার তত ব্যালট ব্যাপার ইসি সরবরাহ করে থাকলেও এতো ব্যালট পেপার কোথা থেকে এসেছে তা নিয়ে অবাক ইসির কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ইসি সচিবালয়ের সচিব মোঃ সিরাজুল ইসলাম ইত্তেফাককে বলেন, ‘যত ভোটার তত ব্যালট পেপার ছাপানো হয়। এর বাইরে একটি ব্যালট পেপারও ছাপানো হয় না। ফলে শতভাগ ভোট দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। এটা কিভাবে হয়েছে-তা দ্রুত খতিয়ে দেখা হবে।

গত ২৩ এপ্রিল তৃতীয়ধাপের ৬১৫টি ইউপিতে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাংগা উপজেলার বেলছড়ি ইউপিতে অস্বাভাবিক ভোটে চেয়ারম্যান হিসাবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বিজয়ী হয়েছেন। ওই ইউপিতে মোট ভোটার ৩ হাজার ১২৮। অথচ ব্যালট বাক্সে ভোট পড়েছে ৬ হাজার ১৩৫টি। রিটার্নিং অফিসার বৈধ ভোট দেখিয়েছেন ৬ হাজার ৩৯। ভোট বাতিল হয়েছে ৯৬টি। প্রদত্ত ভোটের হার ১৯৬ শতাংশ।

একইভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে ১০৭ শতাংশ নওগাঁও জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার চন্দননগর ইউপিতে। এই ইউপিতে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ বদিউজ্জামান। চন্দননগর ইউপিতে মোট ভোটার ১৯ হাজার ৩১০। ভোট পড়েছে ২০ হাজার ৬৯৪টি। বৈধ ভোট পড়ে ২০ হাজার ৪৭৮টি। বাতিল ভোট পড়ে ২১৬টি।

তৃতীয় সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে খাগড়াছড়ির মাটিরাংগা উপজেলার গোমতি ইউপিতে। এই ইউপিতে ভোট পড়ে ৯৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ৬৫৬৮ জন ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ৬ হাজার ৪৭৪ জন।

তৃতীয়ধাপে ৯টি ইউপিতে ৯০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। ৯টির মধ্যে ৬টিতে বিজয়ী আওয়ামী লীগের প্রার্থী। আর তিনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী। এছাড়াও ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ভোট পড়েছে ২৪২টি ইউপিতে। এসব ইউপির অধিকাংশে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা।

ইসির সংশ্লিষ্টরা জানান, তৃতীয়ধাপে নির্বাচনে সহিংসতা কম হলেও ভোট অনিয়ম ও জোরপূর্বক ব্যালট পেপারে সিল মারার ঘটনা বেশি ঘটে। বিশেষ করে এবার নির্বাচনী কর্মকর্তারা স্বয়ং ভোট অনিয়মে সরাসরি জড়িয়ে পড়েন। এসব কারণে এবার অস্বাভাবিক ভোট হয়েছে।

ইসির হিসাব

ইসির পাঠানো তথ্যানুযায়ী, তৃতীয়ধাপে ৬১৫টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ফলাফলের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জয় পেয়েছে ৩৯৫টিতে। এর মধ্যে ভোট ছাড়াই ২৯টি ইউপিতে দলটি বিজয়ী হয়। বিএনপির মনোনীত প্রার্থীরা ৬০টি ইউপি বিজয়ী হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয় পেয়েছে ১৩৯টি ইউপিতে। যাদের অধিকাংশ আওয়ামী লীগ, বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন। এই ধাপে ভোট পড়েছে ৭৬ দশমিক ১২ শতাংশ। এই ধাপে জাতীয় পার্টি-জাপা ১৪টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ১টি করে ইউপিতে জয় পায়। জালভোট ও গোলযোগের কারণে ৫টি ইউপির চেয়ারম্যান পদের ফলাফল ঘোষণা স্থগিত রয়েছে।  ইত্তেফাক

 

পাঠকের মতামত: